১৯৭১ সালে শরীয়তপুরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যা

১৯৭১ সালে শরীয়তপুরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যা

নড়িয়ায় গণহত্যা
১৯৭১ সালের ২২ মে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ৫০ জন সেনা নিয়ে লঞ্চের করে মাদারীপুর থেকে শরীয়তপুরের নড়িয়ায় আসে। এখানে এসে ঘড়িসার বাজার, ঝালোপাড়া ও ঘোষপাড়া গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেয়। ঘোষপাড়া গ্রামের নালিত ঘোষকে ধরে একটি গাছের ঝুলিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সেই সঙ্গে পূর্ব নড়িয়া গ্রামের নাসিমা বেগম, কানাই ছৈয়ালকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানি সেনারা। লোনসিং গ্রামে এসে এখানে চারজন পুরুষ ও তিনজন নারীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

ভেদরগঞ্জের মহিষার গণকবর
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভেদরগঞ্জের মহিষারে দুই শতাধিক পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোষরদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর সম্মুখযুদ্ধ হয়। এতে ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মহিষারেই ওই ১১ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাকে গণকবর দেওয়া হয়।

পালং মধ্যপাড়া গ্রামে বধ্যভূমি
১৯৭১ সালের ২২ মে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকাররা শরীয়তপুরে পালং থানা (এখন সদর উপজেলা) মধ্যপাড়া গ্রামে আক্রমণ চালিয়ে অসংখ্য নারী-পুরুষকে ধরে নিয়ে নির্যাতন ও হত্যা করে। এখানে রাজাকারদের সহযোগিতায় নীলকান্দি, কাশাভোগ এলাকার হিন্দু–অধ্যুষিত এলাকায় ব্যাপক অত্যাচার চালিয়ে প্রায় তিন শতাধিক মানুষকে হত্যা করে। হত্যার পর তাঁদের মনোহর বাজারের আশপাশে গণকবর দেওয়া হয়।

এ ছাড়া সদরের উত্তর দক্ষিণ মধ্যাপাড়া, মালো পাড়া, ঝালো পাড়া, কাশাভোগ, নীলকান্দি, আংগারিয়া বাজার, ধানুকা, পাল বাড়ি, কোটাপাড়া বাজার, নড়িয়া থানার গোলার বাজার, তেলিপাড়া, ভূমখাড়া বিঝারি গ্রামের হিন্দু ও মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয় পাকিস্তান সেনাবাহিনী। স্বজনদের সামনে অসংখ্য হিন্দু সম্প্রদায়ের পুরুষকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং অসংখ্য নারীকে ধর্ষণ করা হয়।

তথ্য সুত্রঃ প্রথম আলো, নাগরিক সংবাদ।
 লেখকঃ আবু সাঈদকবি, সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক
abusayedone@gmail.com

আপনার মতামত দিন