সূর্যদীঘল বাড়ি (শরীয়তপুর জেলাবাসী রচিত চলচ্চিত্র)
==========================
আমাদের জেলার গর্ব আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সুসাহিত্যিক আবু ইসহাক এর উপন্যাস “সূর্যদীঘল বাড়ি” উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্র।
সূর্যদীঘল বাড়ি (উপন্যাস)
————————–
মাত্র ২০ বছর বয়সে লেখা প্রথম উপন্যাস ‘সূর্যদীঘল বাড়ী’ দিয়ে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্যসমাজে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন আবু ইসহাক।
বিশ্বযুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, দেশবিভাগ প্রভৃতি পরপর চারটি বড় ঐতিহাসিক ঘটনার পটভূমিতে তিনি রচনা করেন সূর্য দীঘল বাড়ী (১৯৫৫)। উপন্যাসটি প্রকাশিত হলে এর রচনাশৈলীও বিষয়বস্ত্ত পাঠকদের আকৃষ্ট করে। কিন্তু সমাজপতিদের ধর্মান্ধতা ও প্রতিহিংসার শিকার হয়ে প্রতিকারহীন নির্যাতন ও দুর্দশার মধ্যে পড়ে। লেখক দেখিয়েছেন পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলেও গ্রামের শ্রমজীবী মানুষের আর্থিক পরিবর্তন আনতে পারেনি। দুর্ভোগ বেড়েছে।
লেখক দেখিয়েছেন পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলেও গ্রামের শ্রমজীবী মানুষের আর্থিক পরিবর্তন আনতে পারেনি। দুর্ভোগ বেড়েছে।-এই কাহিনীর বিচিত্রতার মধ্যে মূল বিষয় একটিই; তা হচ্ছে কুসংস্কার, সম্পদ, ধর্ম, প্রতিপত্তি, সামাজিক বাধা-নিষেধ, এমনকি জাতীয়তাবোধ- এ সব কিছুকেই কাজে লাগিয়ে শ্রমজীবি ক্ষুধার্ত মানুষকে ক্রমাগত শোষণ।
সূর্যদীঘল বাড়ি (চলচ্চিত্র):
————————–
কাহিনী সংক্ষেপ:
বাংলা ১৯৫০ সনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে অবিভুক্ত ভারতের বাংলায় ব্যাবসাসীদের কারসাজিতে ‘পঞ্চাশের আকাল’ নামে যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তাতে বহু লক্ষ দরিদ্র মানুষ প্রাণ হারায়। যারা কোনমতে শহরের লঙ্গরখানায় পাত পেতে বাঁচতে পেরেছিল তাদেরই একজন একালের সময় স্বামী পরিত্যক্ত জয়গুন।স্বামী পরিত্যক্তা জয়গুনের দু-সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম উপন্যাসের মূল বিষয়বস্ত্ত। দুর্ভিক্ষ-পীড়িত জয়গুন অন্নের সন্ধানে প্রথমে গ্রাম ছেড়ে শহরে যায়, কিন্তু নগরজীবনের নিঃস্ব, তিক্ত ও পঙ্কিল অবস্থায় টিকতে না পেরে আবার স্বগ্রামে ফিরে আসে। সঙ্গে তার মৃত প্রথম স্বামীর ঘরের ছেলে ও দ্বিতীয় স্বামীর ঘরের মেয়ে। আরো আছে মৃত ভাইয়ের স্ত্রী-পুত্র। তারা গ্রামে ফিরে এসে এমন এক খন্ড জমিতে ঘর তৈরী করে যেটির অপয়া ভিতে বলে পরিচিতি ছিল। জীবনের যুদ্ধে যখন সে প্রানপন লড়ছে তখর তর প্রতি গায়ের মোড়লের দৃষ্টি পড়ে। দ্বিতীয় স্বামীও তাকে আবার ঘরে তুলতে চায়। সে কারো প্রস্তাবেই সে দেয় না। কিন্তু এ দুজনের সাক্ষাত ঘটে এবং মরল তার প্রতিযোগীকে হত্যা করে। ঘটনার একমাত্র দর্শক হিসেবে জয়্গুনকেও মূল্য দিতে হয় অন্যভাবে।এ চলচ্চিত্রটি একাধিক বিদেশি ভাষায় অনূদিত হয়।
কলা কুশলী:
পরিচালক মসিহউদ্দিন শাকের ও শেখ নিয়ামত আলী
প্রযোজক মসিহউদ্দিন শাকের (জনচিত্রায়ন)
রচয়িতা আবু ইসহাক (উপন্যাস)
সুরকার আলাউদ্দিন আলী
চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেন (আলোকচিত্রী)
সম্পাদক সাইদুল আনাম টুটুল
বণ্টনকারী শাওন সাগর লিমিটেড
মুক্তি ১৯৭৯
দৈর্ঘ্য ১৩২ মিনিট
দেশ বাংলাদেশ
ভাষা বাংলা
শ্রেষ্ঠাংশে
……………………..
* ডলি আনোয়ার * জহিরুল হক * রওশন জামিল * আরিফুল হক * কেরামত মাওলা * এ টি এম শামসুজ্জামান * হাসান ইমাম * ফখরুল হাসান বৈরাগী * নাজমুল হুদা বাচ্চু * লেনিন * ইলোরা গহর *
সম্মাননা
……………………..
1) আন্তর্জাতিক সম্মাননা : সূর্য দীঘল বাড়ী ছবিটি (১৯৮০) সালের ম্যানহেইম চলচ্চিত্র উৎসব, জার্মানিতে অংশগ্রহণ করে এবং তিনটি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে যথাক্রমে ডুকাট্ পুরস্কার, ক্যাথটিক জুরি পুরস্কার, এভান্গেলিক্যাল জুরি পুরস্কার।
2. সূর্য দীঘল বাড়ী ছবিটি ফিগুএরা দা ফোজ চলচ্চিত্র উত্সব (১৯৮০), পর্তুগাল এ একটি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার : সূর্য দীঘল বাড়ী ছবিটি শ্রেষ্ঠ পরিচালক সহ মোট ছয়টি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে।
বাংলাদেশ সিনে-জার্নাল এসোসিয়েসন পুরস্কার : সূর্য দীঘল বাড়ী ছবিটি বাংলাদেশ সিনে-জার্নাল এসোসিয়েসন এর মোট ছয়টি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে ১৯৭৯ সালে।
আপনার মতামত দিন