(শরীয়তপুর জেলা তথা বিক্রমপুর পরগনার প্রথম এবং ঢাকার প্রথম নারী বিষয়ক পত্রিকা ‘অবলা বান্ধব’ এর সম্পাদক)
জন্ম: নড়িয়া থানার লোনসিং গ্রামের গাঙ্গুলী পরিবারে ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দের ২০এপ্রিল বিক্রমপুরের মাশুরখন্ড গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরে নড়িয়া উপজেলার লোনসিং গ্রামে স্থায়ী বসতি স্থাপন করেন।
কর্মজীবন: ব্রাহ্মকর্মী দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন ত্যকালীন লোনসিংহ মিড্ল ইংলিশ স্কুলের হেড্ মাস্টার ।
দ্বারকনাথ লোনসিং থেকে অবলাবান্ধব নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। এটি তৎকালীন বিক্রমপুরের প্রথম পত্রিকা। এর প্রথম পত্রিকা সংখ্যা প্রকাশিত হয় ১০ জ্যৈষ্ঠ, ১২৭৬ সালে অর্থাৎ ইংরেজি ১৮৬৯ সালের ২৪ মে। পত্রিকাটি ঢাকার সুলভযন্ত্র থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত হতো বলে এটি ঢাকার সংবাদপত্রের অন্তর্ভুক্ত করা যায়। নারীবিষয়ক ঢাকার প্রথম পত্রিকা ছিল অবলা বান্ধব । উনিশ শতকে পশ্চাৎপদ পূর্ববাংলা থেকে নারী স্বাধীনতার স্লোগান নিয়ে একটি মুখপত্র প্রকাশ করা কম সাহসের বিষয় নয়। ১৮৭০ সালে সম্পাদক কলকাতায় চলে গেলে সেখান থেকেই অবলা বান্ধব প্রকাশিত হতে থাকে।
রাজনৈতিক জীবন: দ্বারকনাথ একজন সক্রিয় কংগ্রেস কর্মী ও নারী প্রগতিতে বিশ্বাসী ছিলেন।
নারী শিক্ষায় ভুমিকা: স্ত্রী শিক্ষার প্রসার ও তাদের স্বাবলম্বী করার প্রয়াসে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। ‘না জাগিল সব ভারত ললনা এ ভারত আর জাগিবেনা ’ প্রখ্যাত গানটি তারই রচিত। ভারতীয় কংগ্রেসে নারী অংশগ্রহনের ব্যাপারে তিনি ভূমিকা রাখেন। ১৮৮৯ সালে মোম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে তার স্ত্রী কাদম্বিনী বসু সহ ৬ জন মহিলা উপস্থিত ছিলেন। বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী ও লাঠিয়াল পুলিশ বিহারী দাসের সংগে তাঁর পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। দ্বারকনাথ প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে কাদম্বিনী বসুকে বিবাহ করেন। কাদম্বিনী বসু কোলকাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা গ্রাজুয়েট।
মৃত্যু: ১৮৯৮ সালের ২৭ জুন দ্বারকনাথ পরলোকগমন করেন।
সুত্র: শরীয়তপুর অতীত ও বর্তমান (আবদুর রব সিকদার ও ইন্টারনেট)
আপনার মতামত দিন