আব্দুর রাজ্জাক (1942 -2011)
রাজনীতিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক।
:১৯৪২ সালের ১ আগস্ট শরিয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ ডামুড্যা গ্রামে তাঁর জন্ম। পিতার নাম ইমামউদ্দিন এবং মাতা বেগম আকফাতুন্নেসা। আবদুর রাজ্জাক ১৯৫৮ সালে ডামুড্যা মুসলিম হাইস্কুল থেকে এস.এস.সি এবং ১৯৬০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৪ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে বি.এ (অনার্স) এবং পরে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৭ সালে এল.এল.বি ডিগ্রি লাভ করেন। আবদুর রাজ্জাক ছাত্রাবস্থায়ই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের (যা নিউক্লিয়াস নামে বহুল পরিচিত) তিন সদস্যের অন্যতম। এই পরিষদ ছিল ছাত্রলীগের একটি প্রাগ্রসর প্রগতিবাদী অংশ যা ষাটের দশকের প্রথমদিকে একটি স্বাধীন জাতি গঠনের ধারণার উন্মেষ ঘটায়। তিনি ১৯৬০ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। আবদুর রাজ্জাক ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল ছাত্র ইউনিয়নের সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি বিভিন্ন সময়ে কয়েকবার গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন। আবদুর রাজ্জাক ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৭ এবং ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৮ সালে দুই মেয়াদে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৬৬ সালের ছয়দফা আন্দোলন, এগার দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যূত্থানে অংশগ্রহণ করেন। আবদুর রাজ্জাক ১৯৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীর অন্যতম কমান্ডার ছিলেন আবদুর রাজ্জাক। তিনি দেরাদুনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে আবদুর রাজ্জাক ছিলেন একজন জনপ্রিয় সংসদ সদস্য। তিনি দলীয় এবং সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ কার্যকালে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। আবদুর রাজ্জাক শরিয়তপুর-৩ আসন থেকে ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক গঠিত বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের (বাকশাল) সম্পাদক নিযুক্ত হন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর আবদুর রাজ্জাককে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ১৯৭৮ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৩ সালে তিনি আওয়ামী লীগ ত্যাগ করে পুনরায় বাকশাল গঠন করেন। আবদুর রাজ্জাক আশি ও নববইয়ের দশকের প্রথমদিকে হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এরশাদের সামরিক শাসনামলে ১৯৮৭ সালে তিনি কারারুদ্ধ হন। ১৯৯২ সালে বাকশাল ও আওয়ামী লীগ একীভূত হলে আবদুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের ২৯ জুলাই উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যপদ লাভের পূর্ব পর্যন্ত তিনি প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে বহাল ছিলেন। তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি শরিয়তপুর-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গঠিত ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সদস্য ছিলেন আবদুর রাজ্জাক। লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১১ সালের ২৩ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। |
এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। জাতীয় নেতা মরহুম আব্দুর রাজ্জাকের পরিবার এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের দ্বারা ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
উদ্দেশ্যঃ
- মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিকল্পিত সমৃদ্ধ, শোষণ ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা।
- উদ্ভাবনী কর্মসূচি এবং কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশকে সমর্থন করা।
- মানব বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং সামাজিক ক্ষেত্রে টেকসই কর্মসূচির মাধ্যমে জাতীয় মানব রাজধানী গঠনের জন্য সহায়তা
- সারাদেশে নির্বাচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লক্ষ্যে সহায়তা প্রদান করা।
- জাতীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের বিষয়গুলিতে গবেষণা সমর্থন এবং প্রচার করা।
- মেধাবী তবে সুবিধাবঞ্চিত শিশু এবং শিক্ষার্থীদের বিশেষত অটিজম, মানসিক বা শারীরিক অক্ষমতা বা দারিদ্র্য সহ তাদের সহায়তার আকারে সম্পদ অ্যাক্সেস করতে এবং তাদের পূর্ণ সম্ভাবনার উন্নতি করতে সক্ষম করতে।
- বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের চিকিত্সা ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের ব্যবস্থা করা।
- বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, সুরক্ষা এবং সচেতনতা তৈরি করতে।
- প্রবীণ ও প্রতিবন্ধী শিশুদের পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনা করা।
- মাদকাসক্তদের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন এবং মাদকের প্রভাব সম্পর্কে তাদের সচেতন করা।
- বেকার যুবকদের আত্ম-কর্মসংস্থানের জন্য কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান।
- দরিদ্র ও দুর্দশাগ্রস্থ মানুষের চিকিত্সার জন্য সারাদেশে এবং আশেপাশে ক্লিনিক ও হাসপাতাল স্থাপন করা।
- ফাউন্ডেশনের কার্যনির্বাহী কমিটি বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হিসাবে অন্য যে কোনও পরিকল্পনা, কর্মসূচি এবং ক্রিয়াকলাপ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
কার্যনির্বাহী কমিটি
আবদুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের কার্যনির্বাহী কমিটি তাঁর পরিবার এবং সহকর্মীদের দ্বারা গঠিত হয়েছিল। সভাপতি হিসাবে তাঁর স্ত্রী ফরিদা রাজ্জাক ও সহ-সভাপতি হিসাবে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী, জাতীয় নেতা জনাব তোফায়েল আহমেদ এমপি। এছাড়ার রয়েছেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, কূটনীতিক, শিল্পপতি ও দানবীর ব্যক্তিবর্গ।
কার্যক্রমঃ সংগঠনটি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে থাকে।
ভবিষ্যৎ কার্যক্রমঃ মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য Abdur Razzaq Mother & Child Specialised Hospital’
নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছে যেখানে আধুনিক মেশিনারী সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থাকবে।
সংগঠনটি অনেক গুলি উদ্দেশ্যে বাস্তবায়নে কাজ করছে। এ পাতায় আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রকাশ করা হয়েছে এবং ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করার কারণে অর্থের ভিন্নতা থাকতে পারে। তাই বিশদ জানার জণ্যে সংগঠনের ওয়েবসাইট দেখার অনুরোধ রইলো। |
আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইট দেখুন
প্রকাশিত তথ্য সম্পর্কে মতামত ও অভিযোগ জানাতে ভিজিট করুন
আপনার মতামত দিন