অভিশপ্ত নীলকুঠি ঃ ব্রিটিশ নীলকরদের নির্মিত কয়েদখানা ও নীল প্রক্রিয়াজাতকরণ স্থান———————–
অবস্থান: শরীয়তপুর সদর উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নে। শরীয়তপুর সদর থেকে ২৭ কিমি শরীয়তপুর জেলার প্রায় শেষ সীমান্তে।
নীল চাষঃ ——–
ব্রিটিশদের নানাবিধ শোষন ও নির্যাতনের মধ্যে অন্যাতম হলো বাঙ্গালী কৃষদের নীল চাষে বাধ্য করা, নীলচাষ ছিলো অত্যান্ত শ্রমঘণ ও কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ইংরেজ বেনিয়ারা বাংলাদেশের কৃষকদের জোর করে নীল চাষ করিয়ে উৎপাদিত নীল ইউরোপে নিয়ে মুনাফা করতো। নীলকররা কৃষকদের উৎকৃষ্ট জমিতে নীল বুনতে বাধ্য করত। নীল ছাড়া অন্য কোনো শস্য উৎপাদন করতে দিত না। দাদনের টাকা নেওয়ার সময় র্শতসাপক্ষে চুক্তিপত্রে টিপ সই দিতে হতো আর চুক্তি অনুযায়ী কাজ না করলে চাষীর ওপর চালানো হতো অকথ্য অত্যাচার। নীল চাষ করতে না চাইলে কৃষকদের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালানো হতো। যেসব কৃষক অত্যাচারের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতেন, তাদের ভিটেমাটিতে নীল চাষ করা হত। কারও কারও গৃহ-বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হত। প্রতিটি নীলকুঠি ছিল কয়েদখানা।
“অভিশপ্ত নীলকুঠি ঃ ———————-
ব্রিটিশ আমলে শরীয়তপুর এলাকায় ও নীলকরদের অস্তিত্ব ছিল, এখানকার কৃষকদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নীলচাষ করতে হতো। ইংরেজরা সারাদেশের মতো শরীয়তপুরেও নীলকুঠি স্থাপন করেন। মাহামুদপুর, চন্দ্রপুর, বিনোদপুর, চিতলিয়া এলাকার কৃষকদের আটক করে নিয়ে আসতো এই নীলকুঠিতে। “নীল কুঠির ধ্বংসাবশষে – নীলকরদের অত্যাচার, শোষিত মানুষের রক্ত ঘামে সিক্ত হওয়ার স্মৃতি ধারণ করে টিকে আছে যুগের পর যুগ ধরে।
নীল গাছ দেখতে অনেকটা পাট গাছের মতো ০৭ ফিট লম্বা। নীল গাছ কেটে পাটের মতোই জাগ দেওয়া হতো। জাগদিয়ে পচানো পানি আগুনে জাল দিয়ে তা থেকে তলানী বা গাদ হিসেবে আহরণ করা হতো নীল।
ছবিতে তথ্যসংগ্রহকারীর পেছনে লম্বাকৃতির চুল্লি দেখা যাচ্ছে, এখানে নীলের রস জাল দিয়ে নীল তৈরী করা হতো।
————————–
তথ্য সংগ্রহকারীঃ সুমাইয়া শারমিন, আইন বিভাগ, ব্যাচ পঞ্চম, জেড. এইচ. সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
আপনার মতামত দিন