(ধানুকা পালং, শরীয়তপুর)
বিশেষত্ব: জেলার অন্যতম সরকারী কলেজ, শরীয়তপুর সদরে প্রথম মহাবিদ্যালয় ।
প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস:
————————
পদ্মা মেঘনা আর আড়িয়ালখাঁর নরম পলিতে গড়া, হাজী শরীয়তুল্লাহর পূণ্য নামে ধন্য, প্রাচীন ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ একটি জেলার নাম শরীয়তপুর । প্রায় চার পাশে নদী দ্বারা বেষ্টিত হওয়ার ফলে রাজধানী ঢাকার অতি নিকটবর্তী জেলা হওয়া সত্ত্বেও অনোন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এই জেলার মানুষের জীবন মান পশ্চাৎ পদতার আবর্তেই রয়ে গেছে দীর্ঘকাল । এই জেলার মানুষেরা অধিকাংশই দরিদ্র । এ কথা সত্যি যে, মানুষের সামাজিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষাগত উন্নয়ন-অনুন্নয়ন অর্থনৈতিক কর্মকান্ড দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত, সে কারণেই হয়তোবা শরীয়তপুর জেলা শিক্ষা দীক্ষার ক্ষেত্রে হতাশাজক ভাবে পেছনে পড়ে আছে। অথচ শিক্ষাক্ষেত্রে শরীয়তপুর অঞ্চল এক সময় উন্নীত হয়েছিল ঈর্ষণীয় উচ্চতায় । প্রাচীন ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, শরীয়তপুরের ধানুকায় এক সময় স্হাপিত হয়েছিল উপমহাদেশের প্রথম সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় । যার ধ্বংসাবশেষ আজও বিদ্যমান রয়েছে ধানুকার মনসা বাড়ীতে । কালের বিবর্তনে এক সময় এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যত্রুম থেমে যায় । শরীয়তপুর থেকে নিভে যায় শিক্ষাবিকাশের দিপ্যমান সূর্যটি ।
বৃটিশ উপনিবেশিক আমলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে শরীয়তপুর ছিল অতি দূর্গম । ফলশ্রুতিতে অন্যান্য সকল ক্ষেত্রের মত শিক্ষাক্ষেত্রেও শরীয়তপুরে লাগেনি নূন্যতম উন্নয়নের ছোয়া । তদুপরি শরীয়তপুর তথা পালং অঞ্চলটি তৎকালিন স্বদেশী আন্দোলনের ঘাটি হিসেবে বৃটিশ শাসকদের রোষানলে পড়েছিল এ কারণেই হয়তো এ অঞ্চলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সরকারি কোন উদ্যোগ ছিল না । এমনকি দেশ বিভাগের পর পুরো পাকিস্তান আমল জুড়েও শরীয়তপুরে সরকারি পর্যায়ে কিংবা ব্যক্তিগত পর্যায়েও উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয় নি ।
প্রতিষ্ঠাতা:
——————–
স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ সালে ফরিদপুর জেলার মাদারীপুর মহকুমার পূর্বাঞ্চলের ৬টি থানা নিয়ে একটি নতুন মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর সদর দপ্তর স্থাপিত হয় পালংয়ে । নতুন প্রতিষ্ঠিত শরীয়তপুর মহাকুমার প্রথম মহাকুমা প্রসাশক (এস.ডি.ও)এর দায়িত্ব নিয়ে জনাব আমিনুর রহমান নামে এ কর্মকতা অনুভব করেন যে, যদি নব গঠিত শরীয়তপুরকে উন্নয়নের ধারায় সামিল করতে হয় এবং এই অঞ্চলের মানুষের সামগ্রিক উন্নয়ন সাধন করতে হয় তবে প্রথমেই এর শিক্ষা উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে । নব গঠিত শরীয়তপুর সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি এবং কলেজ প্রতিষ্ঠায় আর্থিক অনুদান প্রদান সক্ষম ব্যক্তিবর্গদের সমন্বয়ে মহকুমা প্রশাসক জনাব আমিনুর রহমান বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনাক্রমে পালং থানার ঐতিহ্যবাহী ধানুকায় একটি মহাবিদ্যালয় স্থাপন করার সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহন করেন এবং স্হানীয় জনসাধারন ব্যাপক সাড়া এবং উৎসাহের মধ্য দিয়ে শরীয়তপুর সদরে প্রথম মহাবিদ্যালয় স্হাপিত হয় ।
নামকরণ:
————————–
স্হাপিত হওয়ার সময়ে এই কলেজের নাম ছিল শরীয়তপুর মহাবিদ্যালয় । সরকারি করণ করার পর এর বর্তমান নাম হয় শরীয়তপুর সরকারি কলেজ ।
সাধারণ তথ্য
————————–
নাম:; শরীয়তপুর সরকারী কলেজ
ধরণ :সরকারী ইউনিভার্সিটি-কলেজ
কলেজের প্রকৃতি : উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক পাস ও স্নাতক (সম্মান) পাঠদানকারী কলেজ
স্থাপিত: 09 জুন 1978
সরকারি করণ : 01 মার্চ 1980
College EIIN:113647
SHARIATPUR GOVT. COLLEGE
http://deb113647.dhakaeducationboard.gov.bd/
স্বীকৃতি: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
যোগাযোগ; শরীয়তপুর সরকারী কলেজ
ফোন: ০৬০১-৬১৬৭৬
মোবাইল : ০১৯১১৯১৫২৯৯
শিক্ষাদান ও সুযোগ সুবিধা:
————————–
শরীয়তপুর সরকারী কলেজ পাঠদান পদ্ধতি অত্যান্ত বাস্তব মূখী । শিক্ষক ও শিক্ষর্থীদের হৃদ্যতাপূর্ন সর্ম্পক বিরাজমান থাকায় আন্তরিক পরিবেশে পাঠ দান করা হয়ে থাকে । বিশেষ করে বিজ্ঞানের বিষয় সমূহ ও কম্পিউটার বিষয় হাতে কলমে শিক্ষাদান করা হয় । মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ একাধিক কম্পিউটার সমৃদ্ধ একটি কম্পিউটার ল্যাব থাকায় শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে জীবন মূখী শিক্ষা গ্রহন করতে পারছে ।
অনন্য বৈশিষ্ট্য:
————————–
শরীয়তপুর সরকারি কলেজের অন্যান্য বৈশিষ্ট হচ্ছে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুসম্পর্ক বিদ্যমান ও আনন্দঘন পরিবেশ পাঠদান, একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি সহপাঠ ত্রুম কার্যত্রুম এ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা সুনাম অর্জন করছে ।
এ প্রতিষ্ঠান টি সম্পর্কে আরো তথ্য দিয়ে আমাদের সহায়তা করুন।
আপনার মতামত দিন