মহিসারের দীগম্বরী দিঘী

বর্তমান অবস্থানঃ মহিসার ভেদরগঞ্জ উপজেলার র্অন্তগত একটি ইউনিয়ন এ ইউনিয়নে দিগম্বরী দিঘী অবস্থিত ।

ঐতিহাসিক বিবরণচতুর্থ শতাব্দীতে মহিসারের শ্রী শ্রী দিগম্বরী মাতা ঠাকুররাণীর বাড়ি মন্দিরটি ছিল বলে ধারণা করা হয়। মহারাজ আদি শূরু সর্ব প্রথম সুষ্ঠুভাবে বৃহ্ৎ যজ্ঞানুষ্ঠান ও বৈদিক ধর্ম প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্য ৯৪২ সালে কান্যকুব্জ্ থেকে পাঁচজন শুদ্ধ-সাত্ত্বিক ব্রাক্ষণ এনে বিক্রমপুর অন্তর্গত রামপালে এক বৃহৎ বৈদিক যজ্ঞের আয়োজন করেন। যজ্ঞ শেষে তিনি ঐ পাচঁজন ব্রাক্ষণকে পাচঁগাঁও (পঞ্চসার গ্রাম : যেমন মাঐসার, পন্ডিতসার, ঘড়িসার, ডোমসার ও সামন্তসার) বসতি স্থাপনের ব্যবস্থা করেন।ঐ পঞ্চসার গ্রামের মধ্য মাঐসার তথা মহিসার অন্যতম। এলাকাবাসীর বিশ্বাস মহিসারের ঐ ব্রাক্ষণ পরিবারেই দিগম্বরী মায়ের আর্বিভাব হয়েছে।ষোড়শ শতাব্দীর শেষভাগে বিক্রমপুরাধিপতি বাংলার বার ভুইঁয়ার অন্যতম চাদঁরায় ও কেদাররায়ের আমলে তাঁদেরই কুল পুরোহিত ও গোসাই শ্রীভট্রাচার্য বীরাচার্য দিগম্বরী মায়ের বাড়িতে সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন। চাঁদ- কেদাররায় মনোরম সাজে সজ্জিত নানা পানসি নৌকায় মায়ের বাড়িতে এসে গুরুদেবের সাথে দেখা করতেন এবং আর্শিবাদ লাভ করতেন। সে সময় পূর্ণ বাংলার দুটি পীঠ স্থান অধিক সুখ্যাত ছিল। একটি মহিসার দিগম্বরী মাতা ঠাকুরাণীর বাড়ি (মন্দির) এবং অপরটি চাঁচুরতলা ঠাইরুণ (ঠাকরুণ) বাড়ি। বাংলা ১৩৩৩ সনের ১৫ শ্রাবণ পদ্মার কড়াল গ্রাসে চাঁচুর তলার ঠাইরুণ বাড়িটি পদ্মা গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু মহিসার দিগম্বরী মায়ের মন্দিরটি এখনো অগনিত মানুষের সাহস, বল ও পরিতৃপ্তির অমিয়ধারা বহন করে চলেছে।

শ্রী শ্রী দিগম্বরী মাতা ঠাকুরানীর আর্বিভাবের আগে এই পবিত্র ভুমিটি কি অবস্থায় ছিল তা অস্পষ্ট। বহু অলৌকিক ঘটনা ও কিংবদন্তীর সাক্ষী স্বরুপ বট অশ্বত্থ বৃক্ষযুগল ঘিরেই শ্রী শ্রী দিগম্বরী মাতা স্বরুপে পূর্বাপর অভিহিত হয়ে সেকাল থেকে মহিসার গ্রামের ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের হিন্দু জনসাধারণের সরাসরি পরিচালনায শ্রী শ্রী দিগম্বরী মাতা ঠাকুরাণীর পূজা, শ্রী শ্রী শিব পূজা, শ্রী শ্রী কালী পূজা হরি পূজা সহ বৈদিক শাস্ত্র বিধিমতে বিভিন্ন ক্রিয়াকর্ম ও অনুষ্ঠানাদি হয়ে থাকে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি বৈদিক রীতিতে পরিচালিত হলেও ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে সর্বস্তরের সুশীল জনতার সম্প্রীতির মাঝে বৈশাখী মেলাসহ যাবতীয় উৎসব অনুষ্ঠানাদি সম্পাদিত হয়। মহিসারের মেলা-ই শরীয়তপুর জেলার সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলা।

আপনার মতামত দিন